তমদ্দুন মজলিস কী? এর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
তমুদ্দিন মজলিস বলতে কি বোঝায়?
তমদ্দুন মজলিস কি?
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে যে সকল সংগঠন অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিল তার মধ্যে অন্যতম প্রধান একটি সংগঠন হলাে তমদ্দুন মজলিশ। পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা নির্ধারণের ক্ষেত্রে এবং আরাে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তাদের প্রত্যয় ও অবস্থান ছিল গণমুখী। তমদ্দুন মজলিশ ইসলামি আদর্শাশ্রয়ী একটি সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। ভারত বিভাগের অব্যবহিত পরেই ঢাকায় গড়ে উঠে এ সংগঠনটি।তমদ্দুন মজলিস এর ইতিহাস
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আবুল কাশেমের উদ্যোগে ১৯৪৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর এ সংগঠনটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ভাষা আন্দোলনের প্রথম পর্বে তমদ্দুন মজলিশের ভূমিকা ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার উদ্যোগের বিরুদ্ধে বস্তুত তমদ্দুন মজলিশই প্রথম প্রতিবাদ উত্থাপন করে এবং বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিসহ ভাষা আন্দোলনের সূচনার পথিকৃতের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। তমদ্দুন মজলিশ ১৯৪৭ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা বাংলা না উর্দু শিরােনামে অধ্যাপক আবুল কাশেম সম্পাদিত একটি পুস্তিকা প্রকাশ করে। ঐতিহাসিক এই পুস্তিকায় সন্নিবেশিত নিবন্ধগুলােতে এদের লেখক কাজী মােতাহার হােসেন, আবুল মনসুর আহমদ ও অধ্যাপক আবুল কাশেম বাংলাকে পূর্ব বাংলায় শিক্ষার একমাত্র মাধ্যম, অফিস ও আদালতের ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার পক্ষে জোরালাে বক্তব্য রাখেন। তারা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিও তুলে ধরেন। তারা প্রস্তাব দেন_
✓বাংলা ভাষাই হবে পূর্ব পাকিস্তানের শিক্ষার বাহন।
✓পূর্ব পাকিস্তানের আদালতের ভাষা।
✓পূর্ব পাকিস্তানের অফিসের ভাষা।
✓পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের দাপ্তরিক ভাষা হবে দুটি - বাংলা ও উর্দু।
বাংলা ভাষা বিরােধী নীতির বিরুদ্ধে সম্মিলিত প্রতিরােধ সৃষ্টির লক্ষ্যে তমদ্দুন মজলিশের নেতৃত্বে ১৯৪৮ সালের ২ মার্চ প্রথম রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। ১৯৪৮ সালের ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলে তমদ্দুন মজলিস কর্মী শামসুল আলমকে আহ্বায়ক করে সর্বদলীয় কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রভাষা কর্ম পরিষদ নামে একটি নতুন কমিটি গঠিত হয়। এ সংগঠনটি অত্যন্ত সফলভাবে দীর্ঘ পাঁচ বছর ভাষা আন্দোলনে দক্ষতার সাথে নেতৃত্ব দিয়েছিল ।
this content very helpfull