অলিম্পিক কূটনীতি কি? অলিম্পিক কূটনীতি কাকে বলে? || Olympic Diplomacy

অলিম্পিক গেমসের জনক পিয়েরে দা কুবেরত্যাঁ খেলাধুলাকে রাজনৈতিক বিতর্কের বাইরে রাখার প্রত্যয় নিয়ে বিংশ শতাব্দীর সূচনালগ্নে নতুন করে অলিম্পিক ক্রীড়া আন্দোলনের যাত্রা শুরু হলেও সেই স্বপ্ন থেকে যায় অধরা। যাই হোক চলুন এবার মূল আলোচনায় আসি– 


অলিম্পিক কূটনীতি কি? অলিম্পিক কূটনীতি হলো দুইটি বিবদমান দেশের বিভিন্ন ট্রাকের কূটনৈতিক পর্যালোচনা যখন বন্ধ থাকে তখন সেটি নিরসনের লক্ষ্যে বা দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনুরুদ্ধারের উদ্দেশ্যে মূলত অলিম্পিক গেমসে দুই দেশের আ্যথলেটদের কে অংশগ্রহণের মাধ্যমে যে কূটনৈতিক তৎপরতা দেখা যায় তাকে অলিম্পিক ডিপ্লোম্যাসি বা অলিম্পিকস কূটনীতি বলা হয়। যা অনেকটা পিং পং ডিপ্লোম্যাসি এর মত। এই কূটনৈতিক তৎপরতা যে সবসময় পজিটিভই হয় তা নয়; কখনো কখনো শত্রুতা ও প্রতিযোগিতাকে আরো তীব্রতরও করে। 

বর্তমান বিশ্ব ব্যবস্থায় "অলিম্পিক কূটনীতির" প্রভাব

প্রাচীন গ্রিসে আদি অলিম্পিক ছিল সমাজের যাঁরা নিয়ন্ত্রক তাঁদের বিনোদনের উদ্দেশ্যে আয়োজিত নানা রকম প্রতিযোগিতা, যেখানে সরাসরি অংশগ্রহণকারীদের অধিকাংশই ছিল ক্রীতদাস। ফলে রাজনৈতিক বিভাজন সেখানে ছিল অলিম্পিকের একটি আবশ্যকীয় উপাদান। ১৮৯৬ সালে ব্যারন কুবেরত্যাঁ দ্বারা প্রবর্তিত আধুনিক অলিম্পিক যে রাজনৈতিক বিভাজন থেকে দূরে তা আশা করাই যায় না।

৯ ফেব্রুয়ারি ,২০১৮ তে কোরীয় উপদ্বীপের যুদ্ধংদেহী দুই কোরিয়ার মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় শীতকালীন অলিম্পিক গেমসটি সেকেন্ড ট্রাক কূটনীতির মতো কার্যকর ভূমিকা পালন করেছে । দক্ষিণ কোরিয়ার পিয়ংচ্যাংয়ে অনুষ্ঠিত শীতকালীন অলিম্পিকসে উত্তর কোরিয়ার কাছ থেকে ইতিবাচক সাডা পাওয়ায় অলিম্পিকস কূটনীতি সফলতার মুখ দেখে । পিয়ংচ্যাংয়ের অলিম্পিকসে যুদ্ধংদেহী দুই কোরিয়ার মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে কোরিয়ার পতাকার নিচে দুই দেশের ক্রীড়াবিদদের অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের কুচকাওয়াজে যোগ দেওয়া এবং নারীদের আইস হকি প্রতিযোগিতার জন্য সম্মিলিত একটি দল ঠিক করে নেওয়া। বিগত দিনগুলোর বাগাড়ম্বরপূর্ণ পদধ্বনির আলোকে সাম্প্রতিক এই উদ্যোগকে রীতিমতো বৈপ্লবিক আখ্যায়িত করা যায়। অলিম্পিক-পরবর্তী সময়ে এই ঐক্যবদ্ধতা বা শান্তির ঐক্যতার বিস্তৃত হতে থাকে; কেননা , এর পরই ২৭ এপ্রিল, ২০১৮ সীমান্তবর্তী গ্রাম পানমুনজামে উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন এবং দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জে ইন দীর্ঘ ৬৮ বছর পর যে শান্তি প্রস্তাবে যে একমত হয়েছেন তা পরোক্ষভাবে অলিম্পিক ডিপ্লোম্যাসিরই বাইপ্রোডাক্ট বললেও ভুল হবে না । সেই দৃষ্টিকোণ থেকে বলা যায় কোরীয় উপদ্বীপে অলিম্পিক ডিপ্লোম্যাসি সফলতার মুখ দেখেছে ।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url