উত্তর আধুনিকতাবাদের উদ্ভব ও বিকাশ সম্পর্কে সংক্ষেপে লিখ।

প্রশ্নটি আরও যেভাবে আসতে পারে: * উত্তরাধুনিকতাবাদের উদ্ভব ও ক্রমবিকাশ সম্পর্কে আলোচনা করো। * উত্তর আধুনিকতাবাদের উদ্ভব ও ক্রমবিকাশ সম্পর্কে সংক্ষেপে লিখ। * উত্তর আধুনিকতাবাদের উৎপত্তি ও বিকাশ সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা কর। * উত্তর আধুনিকতাবাদের উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ সম্পর্কে আলোচনা কর । * উত্তর আধুনিকতার উত্থান এবং বিকাশ সম্পর্কে আলোচনা কর।



ভূমিকা: বিংশ শতাব্দীর ইতিহাসে বিশ্ব রাজনীতিতে যে বিষয়টি নবজাগরণ সৃষ্টি করে তা হলো উত্তর আধুনিকতাবাদ। একবিংশ শতাব্দীতে এর প্রভাব সমগ্র বিশ্বে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। আধুনিক যুগের সমস্যা সমাধানের পরিপ্রেক্ষিতে উত্তর আধুনিকতাবাদের উদ্ভব ঘটে। এর ফলে বিশ্ব রাজনীতির গতিপথ পাল্টে যায়।

উত্তর আধুনিকতাবাদের উদ্ভব ও বিকাশ : 

উত্তর আধুনিকতাবাদের উদ্ভব ও বিকাশ সম্বন্ধে সঠিক সময় নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি। তবে বিভিন্ন দার্শনিকের অভিমত হলো প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে এর উদ্ভব ঘটে। এই সময় বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনার সূত্রপাত হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে এ সময়কালকে উত্তর আধুনিকতাবাদ হিসেবে গণ্য করা হয়। ১৮৮০ সালের প্রথম দিকে উত্তর আধুনিকতা শব্দটি চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। 

অনেকের মতে, আধুনিক যুগের বিশ্ব রাজনীতিতে বিভিন্ন সমস্যা পরিলক্ষিত হয়। সেসব সমস্যা সমাধানের জন্য উত্তর আধুনিক যুগের সূচনা হয়। জন ওয়াট কিনস্ চ্যাপম্যান "উত্তর আধুনিকতাবাদ" শব্দটিকে "A Post | modern style of painting" হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এখানে তিনি ফ্রান্সের প্রেক্ষাপটে বর্ণনা করেছেন। ১৯১৪ সালে জে.এস.হামসন তাঁর "The Hibbert Journal" গ্রন্থে উত্তর আধুনিকতাবাদ সম্পর্কে ব্যাপক আলোচনা করেছেন। তিনি এখানে উত্তর আধুনিকতাবাদ সম্পর্কে দ্বৈত মনোভাবের পরিচয় দেন। তিনি ধর্মীয় চেতনাকে উত্তর আধুনিকতাবাদের একটি উপাদান বলে চিহ্নিত করেছেন। 

১৯২১-১৯২৫ সাল পর্যন্ত উত্তর আধুনিকতাবাদকে শিল্প ও সংগীত হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। এইচ. আর. হায়েস ১৯৪২ সালে উত্তর আধুনিকতাবাদকে একটি নতুন সাহিত্য হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। এ.জি. টয়েনবি বলেন, “১৯১৪ থেকে ১৯১৮ সাল পর্যন্ত সময় হলো উত্তর আধুনিকতাবাদের উদ্ভবের সময়। "

আধুনিক কাঠামোর অসন্তোষ হিসেবে উত্তর আধুনিকতাবাদ শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছিল ১৯৪৯ সালে। পরবর্তীতে স্থাপত্য কাঠামোর পরিবর্তন হলে ধারণাটি আরো বদ্ধমূল হয়। এ সময় নগরায়ণ, ঐতিহাসিক ঘটনার প্রভাব বৃদ্ধি পায়। ফলে সমাজ জীবনের প্রভাব ব্যাপক বৃদ্ধি ঘটে।

পিটার ড্রিকার উত্তর আধুনিকতাকে নামহীন যুগ বলে অভিহিত করেছেন। মেল বোচনার ১৯৭১ সালে লন্ডনের একটি হলে বক্তব্য রাখতে গিয়ে উত্তর আধুনিকতাবাদ কথাটি উল্লেখ করেন।

এছাড়া দার্শনিক ওয়াল্টার উত্তর আধুনিকতাবাদ সম্পর্কে চারটি বিষয়ে উল্লেখ করেছেন। যথা :

a. Post modernism-ironist, which sees truth as socially constricted,

b. Scientific-rational, in which truth is found throw methodical, disciplined inquiry,

c. Social-traditional, in which truth is found in the heritage of American and western civilizations,

d. Neo-romantic, in which truth is found attaining harmony with nature or spiritual exploration of the inner self.

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, উত্তর আধুনিকতাবাদ নানা ঘাত প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে উদ্ভব ও বিকাশ সাধিত হয়। তাই উত্তর আধুনিকতাবাদকে সভ্যতার নবজাগরণ বলে অভিহিত করা হয়।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url