কাল্পনিক সমাজতন্ত্র কাকে বলে?

>কাল্পনিক সমাজতন্ত্র কী?
>সমাজতন্ত্র বলতে কী বুঝায়?
>কাল্পনিক সমাজতন্ত্রের সংজ্ঞা দাও ।


পৃথিবীর বিভিন্ন শাসনব্যবস্থার মধ্যে কাল্পনিক সমাজতন্ত্র রাষ্ট্রচিন্তার আলোচনার এক উল্লেখযোগ্য স্থান করে নিয়েছে। সমাজতন্ত্রীদের মধ্যে যাদের চিন্তা চেতনা ও দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে বাস্তব চেতনা অপেক্ষা কল্পনা বেশি তাদের কাল্পনিক সমাজতন্ত্রী বলে ।

কাল্পনিক সমাজতন্ত্রী : অষ্টাদশ শতাব্দিতে ফ্রান্স ও ইংল্যান্ডে সর্বপ্রথম কাল্পনিক সমাজতন্ত্রের ধারণা বিস্তার লাভ করে। সেন্ট সাইমন, চার্লস ফুরিয়ের, রবার্ট ওয়েন, জোসেফ প্রুধো প্রমুখ কাল্পনিক সমাজতন্ত্রীদের মধ্যে অন্যতম। এসব দার্শনিকেরা সমাজতন্ত্রের প্রাথমিক যে ধারণা করেছেন তাতে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের ভিত্তি তৈরি হয়েছে। এদের প্রণীত সমাজতন্ত্রে কাল্পনিক চিন্তা চেতনা বেশি, বাস্তবতা অপেক্ষা কল্পনা প্রবণ ছিল। এজন্য এদের প্রণীত সমাজতন্ত্রকে কাল্পনিক সমাজতন্ত্র বলে অভিহিত করা হয়। কারণ এ সমাজতন্ত্রে দারিদ্র্য শোষণ, নিপীড়ন ও বৈষম্যমূলক সমাজ থেকে মুক্তি পেয়ে কাল্পনিক স্বর্গীয় আদলে সমাজতন্ত্র গড়ে তুলতে চেয়েছেন। এসব সমাজে কোন দ্বন্দ্ব-সংঘাত মারামারি থাকবে না। এ কাল্পনিক দার্শনিকদের ধারণাকে মার্কস নিজেও এ ধারণাকে সমাজতান্ত্রিক বলে ধারণা করেছেন। তবে মার্কস তাঁর বৈজ্ঞানিক ধ্যান-ধারণার সাথে মিল না থাকায় তিনি এসব ধারণাকে কাল্পনিক সমাজতন্ত্র বলে অভিহিত করেছেন।

কাল্পনিক সমাজতন্ত্রীরা একটি ক্ষুধামুক্ত, বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে চাইলেও বাস্তবমুখী কোন পন্থা বা সমাধানের কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সক্ষম হয়নি। কেবল সমস্যা চিহ্নিত করে। একটি মতামত প্রদর্শন করেছেন সমাধান করেননি।

উপর্যুক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, অধ্যাপক ওয়েবার বলেছেন, “তারা গোলাপের সৌন্দর্যের প্রতি বিশেষ নির্দেশ দিলেও গোলাপ গাছের জন্য কোন ক্ষেত্র প্রস্তুত করেনি”। কাল্পনিক দার্শনিকরা তাদের সমাজতন্ত্রের ধারণা বাস্তবিক কোন রূপ দান করতে পারেনি। এজন্য কাল্পনিক সমাজতন্ত্র বলা হয়। তবে সমাজতন্ত্রের সূচনায় কাল্পনিক সমাজতন্ত্র গুরুত্বপূর্ণ ।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url