সার্বভৌমত্বের বহুত্ববাদ কী?

সার্বভৌমত্বের বহুত্ববাদ কি?
সার্বভৌমত্বের বহুত্ববাদ কাকে বলে?
সার্বভৌমত্বের বহুত্ববাদ বলতে কী বোঝায়?
সার্বভৌমত্বের বহুত্ববাদ  বলতে কি বুঝ?
সার্বভৌমত্বের বহুত্ববাদ ব্যাখ্যা কর।
সার্বভৌমত্বের বহুত্ববাদ 
ভূমিকা: সার্বভৌমত্ব শক্তি একটি রাষ্ট্রের চরম ও পরম ক্ষমতা। এই ক্ষমতা বলে রাষ্ট্র বহির্বিশ্বে স্বাধীন জাতি হিসেবে নিজেকে আত্মপরিচয় দিতে পারে। যে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বের ক্ষমতা নেই সে রাষ্ট্র স্বাধীন নয়। এটি রাষ্ট্রের প্রাণস্বরূপ। তাইতো জেলিন বলেন, "It can not legaly imitate except by its own will or limited by any other power than itself."

সার্বভৌমত্বের বহুত্ববাদ : ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ ভাগে সার্বভৌমত্বের বহুত্ববাদের উদ্ভব হয়। একাত্মবাদের বিরুদ্ধে বহুত্ববাদ কঠোর অবস্থান করে। গিয়ার্ক, মেটল্যান্ড, বার্কার, লাঙ্কি, ম্যাকাইভার প্রমুখ লেখকগণ বহুত্ববাদের পক্ষে কথা বলেন। বহুত্ববাদীগণ একাত্মবাদকে তীব্র আক্রমণের মুখে ফেলে দেন। একদলের অভিমত, রাষ্ট্র গুরুত্বপূর্ণ হলেও সমাজের বহুবিধ সংঘের অন্যতম সংঘমাত্র। অন্যান্য সংঘ ব্যতীত রাষ্ট্রকে সার্বভৌম করা অসংগত। আবার আরেক দলের অভিমত, আইনের উৎস রাষ্ট্র নহে। বরং রাষ্ট্র আইনের আওতার মধ্যে পড়ে। সুতরাং আইনকে সার্বভৌম মনে করা সম্পূর্ণ ভুল। তৃতীয় পক্ষ সার্বভৌমত্বের ধারণাকে ভয়ংকর রূপে উপস্থাপন করেছেন। কারণ রাষ্ট্র যদি স্বতন্ত্র হয় এবং বিশ্বজনীন সমাজ ব্যবস্থা যদি তার একত্বের ফলে ব্যাহত হয়, তাহলে মানবের জন্য অভিশাপস্বরূপ হবে। বহুত্ববাদীগণ সার্বভৌমত্বকে সম্মানীয় কুসংস্কার বলে অভিহিত করেছেন। তাদের মতে, এটাই রাষ্ট্র থেকে যত তাড়াতাড়ি দূর করা সম্ভব হবে ততই রাষ্ট্রের জন্য মঙ্গলজনক। 

রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বার্কারের মতে, “সার্বভৌম রাষ্ট্রের মতবাদ যতটা শুষ্ক ও অনর্থক, এমন আর কোনো রাজনৈতিক ধারণা নহে।” 

লাক্সি বলেন, “সার্বভৌমত্বের সমগ্র ধারণাটিকে যদি পরিত্যাগ করা যায় তাহলে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের স্থায়ী উপকার হবে।”

অধ্যাপক লিওসে বলেন, “বাস্তব ঘটনা লক্ষ করলে দেখা যায় যে, সার্বভৌম রাষ্ট্রের তত্ত্ব ভেঙে পড়েছে। "

পরিশেষে বলা যায় যে, সার্বভৌমত্বের বহুত্ববাদ অনুসারে সার্বভৌমত্ব মূল্যহীন। তারা সার্বভৌমত্বকে কুসংস্কার বলে ব্যাখ্যা দেন। অর্থাৎ এটি একত্ববাদের বিপরীত প্রতিক্রিয়া।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url