অধ্যাদেশ কি?

অধ্যাদেশ কী

সাধারণভাবে বলা যায়, রাষ্ট্রপতি নিজে যে আইন জারি করে তাকে "অধ্যাদেশ" বলে। 

সংসদ ভেঙে যাওয়া অবস্থায় অথবা সংসদ অধিবেশন বন্ধ থাকাকালীন কোন সময়ে রাষ্ট্রপতির নিকট জরুরী সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় পরিস্থিতি বিদ্যমান রয়েছে বলে সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হলে তিনি উক্ত পরিস্থিতিতে যেরকম প্রয়োজন বলে মনে করবেন; সেরকম অধ্যাদেশ প্রণয়ন ও জারী করিতে পারবেন। এই অধ্যাদেশ জারীর পর থেকে তা সংসদের আইনের ন্যায় ক্ষমতাসম্পন্ন বলে বিবেচিত হবে। রাষ্ট্রপতির এরূপ আইন প্রণয়নের এবং জারি করার ক্ষমতাকেই "অধ্যাদেশ" বলে। 

আরো সহজ ভাবে বলা যায়, অধ্যাদেশ হল রাষ্ট্রের জরুরী প্রয়োজনে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক জারিকৃত আইন। 

অধ্যাদেশ এর ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো Ordinance (অর্ডিন্যান্স)। বাংলাদেশ সংবিধান অনুযায়ী একমাত্র রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশ জারি করতে পারেন। শুধুমাত্র রাষ্ট্রপতি এই ক্ষমতা প্রয়োগ করার ক্ষমতা রাখেন। বাংলাদেশ সংবিধানের ৯৩(১) উপ-অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি দুটি পরিস্থিতিতে অধ্যাদেশ জারি করার ক্ষমতা রাখেন। নিম্নে সেগুলো উল্লেখ করা হলো: 

(১) জরুরী পরিস্থিতি চলাকালীন সময় যদি সংসদ অধিবেশন না থাকে তবে রাষ্ট্রপতি এই ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের জরুরী প্রয়োজনে অধ্যাদেশ জারি করতে পারবেন।

(২) সংসদ ভেঙে যাওয়া অবস্থায় রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশ জারি করতে পারবেন।


উপরোক্ত পরিস্থিতি গুলোতে রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশ জারি করতে পারলেও এক্ষেত্রে কিছু বিধি-নিষেধ বা শর্ত রয়েছে। রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশ জারির ক্ষেত্রে যে সকল সতর্কতা বা শর্ত মেনে চলবে সেগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো: 

অধ্যাদেশ জারি শর্তসমূহ

১. এমন কোন আইন বা অধ্যাদেশ জারি করা যাবে না যা সংসদের আইন দ্বারা আইনসংগত করা যায় না।

২. রাষ্ট্রপতি এমন কোন আইন বা অধ্যাদেশ জারি করতে পারবেন না যার দ্বারা সংবিধানের কোনো বিধান পরিবর্তিত বা রহিত হয়ে যায়।

৩. রাষ্ট্রপতি এমন কোন অধ্যাদেশ জারি করতে পারবেন না,যার দ্বারা পূর্বে প্রণীত কোন অধ্যাদেশের যে কোন বিধানকে অব্যাহতভাবে বলবৎ করা যায়।

অধ্যাদেশ জারির পরবর্তী প্রক্রিয়া:

কোন অধ্যাদেশ জারী হওয়ার পর সংসদের প্রথম অধিবেশনে তা উপস্থাপিত হবে এবং ইতঃপূর্বে তা বাতিল না হয়ে থাকলে অধ্যাদেশটি একইভাবে উপস্থাপনের পর ৩০ দিন অতিবাহিত হলে অথবা অনুরূপ মেয়াদ উত্তীর্ণ হবার পূর্বে তা অননুমোদন করে সংসদে প্রস্তাব গৃহীত হলে অধ্যাদেশটির কার্যকরতা বাতিল হবে।

প্রত্যেক অধ্যাদেশ যথাশীঘ্র সংসদে উপস্থাপিত হবে এবং সংসদ পুনর্গঠিত হইবার তারিখ হতে ত্রিশ দিনের মধ্যে এই সংবিধানের ৮৭, ৮৯ ও ৯০ অনুচ্ছেদসমূহের বিধানাবলী প্রয়োজনীয় উপযোগীকরণসহ পালিত হবে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url