ভূ অর্থনীতির গুরুত্ব

ভূ-অর্থনীতির গুরুত্ব 

ভূমিকা : প্রাকৃতিক সম্পদকে স্থায়ী উপাদান হিসেবে গণ্য করা হয় যা কোনো জাতীয় শক্তি বৃদ্ধি সাধনকল্পে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রাকৃতিক সম্পদের উপর নির্ভরশীল শিল্পকলকারখানাগুলো ভূ-অর্থনীতির নির্দেশক হিসেবে বিবেচিত হয়। যে কোন দেশের সার্বিক উন্নতি বহুলাংশে তার প্রাকৃতিক সম্পদের উপর নির্ভরশীল। একটি দেশের কাঠামোগত উন্নয়নে ভূ অর্থনীতির গুরুত্ব অনেক।


ভূঅর্থনীতির গুরুত্ব: ভূ-অর্থনীতির গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা করা হলো : 

কাঁচামাল : দেশের স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে একটি দেশের খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়টিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলে অন্যান্য খাতে উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন যেমন জরুরি তেমনি কাঁচামাল ও প্রাকৃতিক সম্পদের প্রয়োজন। যা বিভিন্ন শিল্পের উন্নতির ক্ষেত্রে এবং বিভিন্ন যুদ্ধের সরঞ্জাম উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। খনিজ তেলের গুরুত্ব মূলত প্রথম বিশ্বযুদ্ধ থেকে বাড়তে থাকে। ফলশ্রুতিতে তেলসমৃদ্ধ দেশগুলো আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে আসছে। আধুনিক আণবিক অস্ত্র তৈরিতে ইউরেনিয়াম ব্যবহৃত হয় বলে কয়েক দশকে এ ধাতুর মূল্য অনেক বেড়ে গেছে। যথাযথভাবে প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহার করতে না পারলে সে দেশকে ভূ-অর্থনীতির মানদণ্ডে দুর্বল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ফলে জাতীয় শক্তির সম্ভাবনা এবং প্রাপ্ত জাতীয় শক্তির মধ্যে অনেক পার্থক্য দেখা যায়।

খাদ্য : খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন যে কোন দেশের জাতীয় শক্তি বাড়ানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। ভূ-অর্থনীতির ক্ষেত্রে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন অনেক গুরুত্বপূর্ণ। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করার কারণেই স্নায়ুযুদ্ধকালে আমেরিকা এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন সারা পৃথিবীব্যাপী তাদের প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয়েছিল। কিন্তু জার্মানি এবং ব্রিটেন সেটা করতে পারেনি কারণ তারা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ ছিল না। খাদ্যসংকটের কারণে দুটি বিশ্বযুদ্ধেই জার্মানি তাদের প্রথম দিকের সাফল্য ধরে রাখতে পারেনি। খাদ্যে স্বনির্ভর না হওয়ার দরুন বহু দেশকে আন্তর্জাতিকভাবে দুর্বল বলে ঘোষণা করা হয় এবং তাদেরকে অনেক বিড়ম্বনা সহ্য করতে হয়। খাদ্যে ঘাটতির কারণেই আন্তর্জাতিক অনেক নীতি মেনে নিতে হয় যা দেশের জন্য উন্নয়নে প্রতিবন্ধক। খাদ্যে ঘাটতির কারণেই অনেক দেশ নিজের ইচ্ছামতো বৈদেশিক নীতি পরিচালনা করতে সক্ষম হয় না।

উপসংহার : পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে, সম্প্রতি প্রতিটি দেশের অর্থনৈতিক ভিতকে সুসংগঠিত করতে ভূ-অর্থনীতির গুরুত্ব অপরিসীম। ভূ-অর্থনীতি শুধুমাত্র জনগণের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি করে না। শিল্প সামর্থ্যেরও উন্নতি সাধন করে থাকে। জাতীয় শক্তির উন্নয়নের ক্ষেত্রে ভূ-অর্থনীতির গুরুত্ব অনেক।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url