ভারতের দলীয় ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্যগুলো বর্ণনা কর।

আধুনিক গণতন্ত্র হলো পরোক্ষ বা প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্র বা কল্যাণমূলক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। আধুনিক রাষ্ট্রের বিপুলসংখ্যক জনসাধারণের পক্ষে শাসন কার্যাদি পরিচালনা করা অসম্ভব। তাই নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে তারা পরোক্ষভাবে শাসনকার্যদি পরিচালনায় অংশগ্রহণ করে থাকে। এ প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্রের মূলভিত্তি হলো রাজনৈতিক দল। উদারনৈতিক গণতন্ত্রের সমর্থকরা একাধিক রাজনৈতিক দলের অবস্থিতিকে গণতন্ত্রের সাফল্যের অপরিহার্য মত বলে মনে করেন। তাঁদের মতে, যে দেশে একাধিক রাজনৈতিক দলের অস্তিত্ব নেই, সেখানে কখনোই প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না।

ভারতের দল ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য সমূহ

যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স প্রভৃতি দেশের মতো ভারতও একটি উদারনৈতিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হওয়ায় স্বাভাবিক কারণে এখানে একাধিক রাজনৈতিক দলের অস্তিত্ব প্রত্যক্ষ করা যায়। ভারতে দলীয় ব্যবস্থার কয়েকটি অভিনব বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এগুলো হলো: 

  • ১. সংবিধান বহির্ভূত
  • ২. কংগ্রেস থেকে দলের উৎপত্তি
  • ৩. ভাঙা-গড়ার রাজনীতি 
  • ৪. আধিপত্যশীল দলীয় ব্যবস্থা 
  • ৫. ত্রুটিপূর্ণ ভোটদান পদ্ধতি 
  • ৬. শক্তিশালী বিরোধী দলের অভাব 
  • ৭. মতাদর্শগত ভিন্নতা
  • ৮. দলীয় সংহতি ও ঐক্যের অভাব
  • ৯. এককেন্দ্রিক দলীয় কাঠামো 
  • ১০. দল ত্যাগের রাজনীতি
  • ১১. সম্মিলিত সরকার গঠনের প্রবণতা
  • ১২. আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের সৃষ্টি 
  • ১৩. সাম্প্রদায়িক দলসমূহের উৎপত্তি 
  • ১৪. ভাষাকেন্দ্রিক রাজনৈতিক দলের উৎপত্তি 
  • ১৫. চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠী ও রাজনৈতিক দলের সম্পর্ক

১. সংবিধান বহির্ভূত

ভারতের মূল সংবিধানে রাজনৈতিক দলের উৎপত্তি সম্পর্কিত যদিও কিছু উল্লেখ নেই। তবুও সংবিধান বহির্ভূতভাবে এখানে রাজনৈতিক দলীয় ব্যবস্থা অপরিহার্য অঙ্গ হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। ১৯৮৫ সালে ৫২তম সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে ভারতে রাজনৈতিক দলীয় ব্যবস্থাকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।

২. কংগ্রেস থেকে দলের উৎপত্তি

ভারতের দলীয় ব্যবস্থার অন্যতম উল্লেখযোগ্য উৎপত্তিস্থল হলো ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস। এর থেকেই গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দলগুলোর উৎপত্তি ঘটেছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, কংগ্রেস (ই), কংগ্রেস (স), জনতা দল, সি. সি. আই (এম), সমাজতন্ত্রী দল, এমনকি মুসলিম লীগ, হিন্দু সভা, স্বতন্ত্র ও জনসংঘের মতো দলের নেতৃবৃন্দ স্বাধীনতার পূর্বে কোনো না কোনো সময় ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের মধ্যে থেকে কাজ করেছিলেন।

৩. ভাঙা-গড়ার রাজনীতি 

ভারতের দলীয় ব্যবস্থার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো ভাঙা-গড়ার রাজনীতি। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ১৯৬৯ সালে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস (আর) ও কংগ্রেস (ও) এবং ১৯৭৮ সালে কংগ্রেস (আর), কংগ্রেস (ই) ও কংগ্রেস (আ) দলে বিভক্ত হয়। ১৯৭৭ সালে কংগ্রেস (ভ), লোক দল, জনসংঘ, সি.আর.ডি (Congress for Democracy) ও সংযুক্ত সোস্যালিস্ট পার্টি (S.S.P) ঐক্যবদ্ধ হয়ে জনতা পার্টি গঠন করে।

১৯৭৯ সালে জনতা পার্টি ভেঙে গেলে তার শরিকদলগুলো নিজ নিজ পৃথক অস্তিত্ব বজায় রাখার জন্য সচেষ্ট হয়। ১৯৮৮ সালের অক্টোবর মাসে জনতাদল, জনমোর্চা ও লোকদল ঐক্যবদ্ধ হয়ে জনতা দল গঠন করে। ১৯৯০ সালে চন্দ্র শেখর ও দেবীলাল জনতা দল (সমাজবাদী) নামে অন্য একটি দল গঠন করেন।

দক্ষিণপন্থি দলগুলোর মতো বামপন্থি দলগুলোও ভাঙা- গড়ার রাজনীতিতে মেতে উঠে। প্রমাণস্বরূপ বলা যায়, ১৯৬৪ সালে সি. পি. আই থেকে একটি বৃহৎ অংশ বেরিয়ে গিয়ে সি. পি. আই (এম) নামে একটি নতুন দল গঠন করে। আবার ১৯৬৯ সালে সি. পি আই (এম) নামে একটি নতুন দল গঠন করে আবার ১৯৬৯ সালে সি. পি আই (এম) নামে একটি নতুন দল গঠন করে। আবার ১৯৬৯ সালে সি. পি. আই (এম) এর ক্ষুদ্র অংশ মূল দলের সম্পর্ক ছিন্ন করে সি. পি. আই (এম. এল) নামে একটি নতুন দল গড়ে তোলে। 

তবে একথা সত্য যে কমিউনিস্ট পার্টির মধ্যে রাজনৈতিক মতাদর্শগত বিরোধের জন্য ভাঙা-গড়া হলেও দক্ষিণপন্থি রাজনৈতিক দলগুলো ভাঙা-গড়ার পিছনে রাজনৈতিক মতাদর্শগত ভিন্নতা অপেক্ষা ব্যক্তিগত বিরোধ, নেতৃত্ব বা ক্ষমতা লাভের আকাঙ্ক্ষা প্রভৃতিই হলো প্রধান ।

৪. আধিপত্যশীল দলীয় ব্যবস্থা 

ভারতে তত্ত্বগতভাবে বহুদলীয় ব্যবস্থার অস্তিত্ব থাকলেও ১৯৫২ সালে থেকে ১৯৮৯ সালের মধ্যে মাত্র ২ বছর এবং ১৯৭৭ সাল থেকে ১৯৭৯ পর্যন্ত এ সময় বাদ দিয়ে কেন্দ্রে কংগ্রেস দলের একক প্রাধান্য ও আধিপত্য সুপ্রতিষ্ঠিত ছিল। তবে ভারতে ১৯৮৯ সালের নভেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত নবম নির্বাচনের মাধ্যমে ভারতের শক্তিশালী দলীয় ব্যবস্থার অবসান ঘটাতে বাধ্য হয়। ঐ নির্বাচনে রাজীব গান্ধীর নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস (ই) দল লোকসভায় এককভাবে ১৯৩টি আসন অধিকার করতে সমর্থ হলেও সরকার গঠন করতে তিনি ব্যর্থ হন। তাই ভারতের দলীয় ব্যবস্থাকে এখন আর পূর্বের মতো আধিপত্যশীল দলীয় ব্যবস্থা বলে গণ্য করা হয় না।

৫. ত্রুটিপূর্ণ ভোটদান পদ্ধতি 

ভারতীয় দল ব্যবস্থার অন্যতম উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো স্বাধীনতার পর কংগ্রেস প্রায় প্রতিটি সাধারণ নির্বাচনে (১৯৭৭, ১৯৮৯, ১৯৯১ ছাড়া) শতকরা ৫০ ভাগ ভোটাদাতার সমর্থন না পেয়েও লোকসভায় নিরঙ্কুশ, সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। ১৯৮৪ সালের অষ্টম লোকসভা নির্বাচনে রাজীব গান্ধীর নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস (ই) দল মাত্র ৪৮.১ শতাংশ ভোট পেয়ে ৪১৩টি আসন লাভ করতে সমর্থ হয়েছিল। এরূপ ত্রুটিপূর্ণ ভোটদান পদ্ধতি গণতান্ত্রিক রীতিনীতির পরিপন্থি।

৬. শক্তিশালী বিরোধী দলের অভাব 

ভারতের সাধারণ নির্বাচন পদ্ধতি ত্রুটিপূর্ণ হওয়ায় এবং ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অনেকগুলো দল নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ফলে ভোট ভাগ হয়ে যায়। ফলে প্রদত্ত ভোটের শতকরা ৫০ ভাগ না পেয়েও একটি দল লোকসভায় কিংবা রাজ্য-বিধান সভায় তিন-চতুর্থাংশ না পেয়েও একটি দল লোকসভায় কিংবা, রাজ্য- বিধান সভায় তিন চতুর্থাংশ আসন লাভ করতে সমর্থ হয়। রাজনৈতিক মতাদর্শ ধর্মনিরপেক্ষতা, অর্থনৈতিক নীতি প্রভৃতি প্রশ্নে তীব্র মতবিরোধ না থাকার জন্য বামপন্থি ও দক্ষিণপন্থি বিরোধী দলগুলোর মধ্যে। প্রতিষ্ঠিত হতে পারেনি।

বলাবাহুল্য, শক্তিশালী বিরোধী দলের অবস্থিতি না থাকায় ভারতের সংসদীয় গণতন্ত্র সংকটের মুখোমুখি এসে দাঁড়িয়েছে বলে অনেক মনে করেন।

৭. মতাদর্শগত ভিন্নতা 

ভারতের অনেকগুলো রাজনৈতিক দলের উপস্থিতি থাকলেও এদের মধ্যে রাজনৈতিক আদর্শের ক্ষেত্রে ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, সমাজতন্ত্রীদের মধ্যে কোনো কোনো দল মার্কসীয় সমাজতন্ত্রে, আবার কোনো দল গণতান্ত্রিক সমাজবাদে এবং কোনো দল সুভাষবাদী সমাজতন্ত্রে বিশ্বাসী। যেসব দল সমাজতন্ত্রে বিশ্বাসী নয় তারাও নানাভাবে বিভক্ত। কেউবা ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদে, কেউবা রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণবাদে, কেউবা জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠনে বিশ্বাসী। রাজনৈতিক মতাদর্শগত পার্থক্য ছাড়াও কর্মসূচিগত ক্ষেত্রে পার্থক্য বিশেষভাবে লক্ষণীয়।

৮. দলীয় সংহতি ও ঐক্যের অভাব

ভারতের দলীয় ব্যবস্থার প্রতি লক্ষ করলে দেখা যায় যে, বেশিরভাগ রাজনৈতিক দলের মধ্যে ঐক্য, সংহতি, নিয়মানুবর্তিতা ইত্যাদির বিশেষ অভাব। সব দলের মধ্যে দলীয় শৃঙ্খলা, নিয়মানুবর্তিতা প্রভৃতি রক্ষা করা সংশ্লিষ্ট বিশেষ বিশেষ দলনেতাদের কাছে একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনকি কংগ্রেস (ই)-র মতো সম্পূর্ণ ব্যক্তিকেন্দ্রিক দলের মধ্যেও এ সমস্যা তীব্র আকার ধারণ করেছে। কংগ্রেসের থেকে আরো খারাপ অবস্থা হলো জনতা দল, তেলেগু দেশম, কেরালা কংগ্রেসের প্রভৃতি দলের এই দলগুলো কার্যত গোষ্ঠীদ্বন্ধে এমন দীন-বিদীর্ণ যে, বর্তমানে এদের অস্তিত্ব রক্ষা করাই সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

৯. এককেন্দ্রিক দলীয় কাঠামো

ভারতের রাষ্ট্রীয় কাঠামো যুক্তরাষ্ট্রীয় । কিন্তু দলীয় কাঠামোর এককেন্দ্রিক প্রবণতা ভারতের দলীয় ব্যবস্থার লক্ষণীয়। অন্যভাবে বলা যায়, দলের রাজা ও আঞ্চলিক শাখাসমূহ থাকলেও সেগুলো কার্যত কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশকে কার্যকর করার যন্ত্র হিসেবেই কাজ করে।

১০. দল ত্যাগের রাজনীতি 

ভারতীয় দল ব্যবস্থার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো দল ত্যাগ। একই দিনে আইনসভার একজন সদস্য একাধিকবার দল বদল করেছেন এমন নজিরও ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে বিরল নয় এরূপ দল ত্যাগের ফলে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ক্ষেত্রে যেমন অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়। তেমনি ভোট দাতাদের কাছে জনপ্রতিধিরা বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়ে ফেলেন। 

এমনকি দল ত্যাগের ফলে জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকারের পতনও ঘটে। ভারতে দক্ষিণপন্থি রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দল ত্যাগের প্রবণতা বিদ্যমান রয়েছে। ১৯৮৫ সালে রাজীব গান্ধীর সরকার ৫২তম সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে দল ত্যাগ রোধের চেষ্টা করেও তা রোধ করা সম্ভব হয়নি। এমনকি ১৯৯৩ সালে রাম লক্ষ্মণ যাদব ও অজিত সিংহ নিজ সমর্থকদের নিয়ে কংগ্রেসে যোগদান করেছিলেন।

১১. সম্মিলিত সরকার গঠনের প্রবণতা

ভারতীয় দলীয় ব্যবস্থার উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো বিভিন্ন দলের সমন্বয়ে সরকার - গঠনে প্রবণতা। ১৯৬৭ সালের চতুর্থ সাধারণ নির্বাচনের পর হতে বর্তমান পর্যন্ত সবকটি সরকারই নির্বাচনের সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন না করতে পারায় সম্মিলিতভাবে সমমনা দলগুলো সরকার গঠনের এ জন্য সচেষ্ট হয়।

১২. আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের সৃষ্টি 

ভারতের রাজনৈতিক দলসমূহ জাতীয় দল ও আঞ্চলিক দল হিসেবে দু'ভাগে বিভক্ত। ভারতের দলীয় ব্যবস্থার দিকে লক্ষ করলে দেখা যায় যে, ভারতে ৬টি জাতীয় দল এবং ২২টি আঞ্চলিক দল নির্বাচন কমিশন কর্তৃক স্বীকৃত হয়েছে। ভারতের সংবিধানের নিয়ম অনুযায়ী কোন দলকে ৪টি বাক্য এবং কেন্দ্র শাসিত রাজ্য ও রাজধানী অঞ্চলে নির্বাচনে প্রদত্ত বৈধ ভোটের ৪ শতাংশ ভোট পেতে হয়।

১৩. সাম্প্রদায়িক দলসমূহের উৎপত্তি 

ভারতীয় দলীয় ব্যবস্থায় সাম্প্রদায়িক দলসমূহের উৎপত্তি বিশেষভাবে লক্ষণীয়। ভারতে ধর্মকে কেন্দ্র করে রাজনীতিতে ফয়দা লুটার জন্য অনেক দলের উৎপত্তি হয়েছে। এসব দলের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ভারতীয় জনতা পার্টি, হিন্দু মহাসভা, শিবসেনা প্রভৃতি। এর মধ্যে হিন্দু মহাসভা ধর্মকে ব্যবহার করে নিজ ধর্মের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করার অপচেষ্টায় লিপ্ত থাকায় ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্ট হচ্ছে। যে কারণ সাম্প্রদায়িকতার বিষ পাপ ছড়াচ্ছে। আবার কিছু কিছু রাজনৈতিক দল আছে ধর্মীয় ভিত্তিতে গড়ে না উঠলেও ধর্মকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে নিজের স্বার্থসিদ্ধিতে ব্যস্ত থাকে। যেমন- ভারতীয় জনতা দল (বিজেপি)।

১৪. ভাষাকেন্দ্রিক রাজনৈতিক দলের উৎপত্তি

ভারতের দলীয় ব্যবস্থার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো ভাষাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক দল গঠন। ভারত বৃহত্তম জনগোষ্ঠীর দেশ হওয়ায় স্বাভাবিক কারণেই এখানে অঞ্চলভিত্তিক বিভিন্ন ভাষাভাষীর জনগোষ্ঠীর বসবাস। এসব জনগোষ্ঠী নিজ ভাষাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক দল সৃষ্টি করে। উদ্দেশ্য নিজ ভাষাভাষীর জনগোষ্ঠীর স্বার্থ সংরক্ষণ করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ভাষাভিত্তিক দলের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের গোর্খা লীগ ও ঝাড়খণ্ডের মুক্তিমোচা।

১৫. চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠী ও রাজনৈতিক দলের সম্পর্ক

ভারতীয় রাজনীতির দলের সাথে চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর সাথে নিবিড় সম্পর্ক বিদ্যমান। এসব চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর রাজনৈতিক দলের আদর্শ কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য তারা প্রচার প্রচারণা অব্যাহত রাখে।

উপসংহার 

উপর্যুক্ত আলোচনার পরিশেষে বলা যায় যে, উপর্যুক্ত বৈশিষ্ট্যগুলো ভারতের দলীয় ব্যবস্থায় পরিলক্ষিত হয়। এরূপ বিশাল ভারতবর্ষে উদারনৈতিক গণতন্ত্রের বিকাশ সাধিত হয়েছে। কেননা দলীয় ব্যবস্থার অপর নাম গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা। রাজনৈতিক দল ছাড়া গণতন্ত্র অচল। গণতন্ত্রের বিকাশের জন্য ভারতের রাজনৈতিক দলগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে।

অতি সংক্ষিপ্ত কিছু প্রশ্ন উত্তর

১. কত সালে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি গঠিত হয়েছিল?

উত্তর: ১৯২০ সালে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি গঠিত হয়েছিল। 

২. ভারতে কংগ্রেস কত সালে গঠিত হয়?

উত্তর: ১৮৮৫ সালে।

৩. ভারতে মুসলিম লীগ কবে গঠিত হয়েছিল? 

উত্তর: ১৯০৬ সালে।

৪. ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠা করেন কে? 

উত্তর: এলান এক্টাভিয়ান হিউম।

৫. ভারতীয় AIDKM দল গঠিত হয় কার নেতৃত্বে?

উত্তর: রামচন্দ্রের নেতৃত্বে।

৬. ভারতের ভাষাভিত্তিক দলের উদাহরণ কোনটি? 

উত্তর: ডিএমকে এবং আইডিএমকে ।

ভিডিও দেখুন 




Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url